শিরোনাম দেখে হয়তো অনেকেই ভাববেন এই লেখা এখানে কেন, ভ্রমণ বিষয়ক লেখা
মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পাতায়! কিন্তু প্যারিস কত চমৎকার তা এই লেখার মূল
বিষয়বস্তু নয়, প্যারিস ভ্রমণের সময় নিজেকে যে নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম তা এই লেখার
মূল উপজীব্য। সেই বিবেচনায় লেখাটা এখানে জায়গা পেতেই পারে।
যেহেতু বলেছি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো, তাই
পুরানো আমি সম্পর্কেও কিছু বলা দরকার। আমরা প্রত্যেকেই পরিবার ও পরিবেশ থেকে
নিজেদের সম্পর্কে ধারণা লাভ করি। আমিও নিজের সম্পর্কে তেমন কিছু ধারণা নিয়েই বড়
হয়েছি, যেমন অলস, অগোছালো, অপদার্থ ইত্যাদি। আমাকে দিয়ে যে কিছু হবেনা এই কথা আমি
এতো শুনেছি যে বেশ সিরিয়াসলি বিশ্বাস করি। ছোটবেলা থেকে যে বিষয়টা ভালো পারতাম তা
হলো বই পড়া। এখানেও কিন্তু আছে, পড়ার বই না গল্পের বই। কিন্তু আমি যেহেতু এতো অলস
প্রকৃতির পড়াশোনা করলেও যে আমাকে দিয়ে কিছু হবেনা এ বিষয়ে সবাই একমত ছিলো। একথা
সত্যি ঘরের কাজের ক্ষেত্রে আমি অনেকটাই অলস। এখনো রান্না করার চেয়ে না খেয়ে থাকাটা
সহজ মনে হয়! তবে আমার এই অলস হয়ে তৈরি হওয়ার পেছনে আমার পরিবারের ভূমিকা নেহাত কম
নয়। আমার বাবা আমার কাজগুলো করে দিতে খুব পছন্দ করে, আমার পড়াশোনাটাও আব্বু করে
দিত, শুধু সম্ভব নয় বলে আমি করতে শিখেছি। যার ফলে বইয়ের জগতের বাইরে কোন কিছু সম্পর্কে
স্পষ্ট ধারণা জন্মায়নি। আমি স্বভাবে অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ এবং নড়বড়ে আত্মবিশ্বাস
নিয়ে বড় হয়েছি।
মাস্টার্সে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে ঢোকার পর নিজেকে রিফর্ম করার উদ্যোগ
নিলাম। আমার সুপারভাইজর বললেন ক্লায়েন্টকে যে হোমওয়ার্ক দিব তা যেন নিজে আগে
অনুশীলন করে নেই। নিজেকে বোঝা ও পরিবর্তনের ক্রমাগত প্রচেষ্টাই আমাকে পেশাগত দিকে
সফলতা লাভের আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে দিলো। যার ফলশ্রুতিতে পরিবারের প্রতি অতিরিক্ত
নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠার জন্য দেশের প্রায় শেষ প্রান্তে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারী
প্রতিষ্ঠানে চাকুরিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। উপরোক্ত সমালোচনার পাশাপাশি
পরিবারের সমর্থনের কথা উল্লেখ না করলে অন্যায় হবে। চাকুরিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত
বাস্তবায়নে আমাকে যুদ্ধ করতে হয়নি। আমাদের পরিবারের মানুষগুলো যখন আমাদের সমালোচনা
করে তারমানে এইনা যে তারা আমাদের ভালোবাসে না, তারা শুধু বুঝতে পারেনা নেতিবাচক এই
কথাগুলো মানুষের আত্মবিশ্বাসকে কতখানি গুড়িয়ে দেয়!
মেন্টাল হেলথ কোর্স ট্রেনিং-এর জন্য যখন আবেদন করেছিলাম, অনেকখানিই
আত্মবিশ্বাস ছিলো যে সিলেক্টেড হবো। কিন্তু নিজেকে গুছিয়ে রাখতে পারব, কোন ভুলভাল
ছাড়াই ঠিকমতো পৌছাতে পারব এই বিষয়ে অতটা আত্মবিশ্বাস ছিলনা। কারণ ট্রেনিং হবে
নেদারল্যান্ডের এগমন্ডে। শুধু মনে হতে লাগল আমি নিশ্চয়ই পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলব, বা
জরুরী কিছু হারিয়ে ফেলব বা ফেলে যাব। যাওয়ার আগের রাতে ঘুমাতে পারলাম না।
আমস্টার্ডামের শিফল এয়ারপোর্ট থেকে হোস্টেল পৌঁছানোই প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিলো।
লাগেজ কালেক্ট করার সময় মনে হতে লাগল আমি বোধহয় আমার লাগেজ চিনতে পারবনা। এই
চিন্তা আসা মাত্রই হার্টবিট বেড়ে গেল! প্রায় অনেক্ষণ পরেই লাগেজ উদ্ধার করতে
পারলাম। প্লেনে আমার পিছনের সিটে থাকা এক বয়স্ক দম্পতি আমাকে ম্যাপ বুঝিয়ে দেয়ার
চেষ্টা করলেন, টিকেট কাটতে সহায়তা করলেন এবং প্লাটফর্মও দেখিয়ে দিলেন যেখান থেকে
ট্রেনে উঠতে হবে, মাঝে আবার ট্রেন চেঞ্জ করতে হবে তারপর আবার বাস। এতো বেশি
স্ট্রেস কাজ করছিল যে ভাল করে কিছু চিন্তাও করতে পারছিলাম না। ট্রেন আসলো, আবার
আরেক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম এটাই সেই ট্রেন কিনা কনফার্ম হওয়ার জন্য। ভদ্রলোককে
এশিয়ান মনে হলো, কিন্তু তা জানার সুযোগ ছিলনা। লাগেজ টেনেহিচঁড়ে উঠলাম, তিনিও
উঠলেন। আমি উঠেই কোন স্টেশনে আবার নামব তা বলার জন্য মুখ খুলতেই ট্রেন ছেড়ে দিলো, আর
সাথে সাথেই আমি ম্যাট্রিক্স ছবির মতো পেছনে দিকে পড়ে যেতে লাগলাম। ভদ্রলোক আমাকে
হাত বাড়িয়ে ধরে ফেললেন। ট্রেনে এতোগুলো মানুষের সামনে আমি পড়ে যাচ্ছি আর অপরিচিত
এক ভদ্রলোক হাত ধরে আমার পতন রোধ করেলেন, যে কোন স্বাভাবিক সময়ে এই লজ্জাতেই আমি
মরে যেতে চাইতাম। কিন্তু ওই মুহুর্তে আমি দ্বিতীয়বার ভাববার অবকাশ পেলাম না। সোজা
হয়ে দাঁড়িয়েই ম্যাপ দেখিয়ে জানতে চাইলাম “আমি এখানে নামব, কখন নামতে হবে আপনি কি
একটু বলে দিতে পারবেন?”
আমি ঠিকমতোই হোস্টেলে পৌঁছেছিলাম, তবে সেখানে অনেক মানুষের অবদান আছে। সেই
ডাচ ভদ্রমহিলার কথা না বললেই নয়, যিনি আমার লাগেজ নিয়ে প্রায় দৌড়ে আমাকে বাসে তুলে
দিয়েছিলেন। কারণ সেখানে একঘন্টা পরপর বাস ছাড়ে, না হলে আমাকে একঘন্টা দাঁড়িয়ে
থাকতে হতো। এগারোদিনের ট্রেনিং-এর পর যখন প্যারিসে বেড়াতে যাওয়ার সময় আসল সেই
রাতেও ঘুমাতে পারিনি। এক অজানা ভয়ে মাথা গরম হয়ে যাচ্ছিল। কারণ এর পরে পুরোটাই
একা। এই কদিন বিভিন্ন দেশের হলেও একই প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের সাথে ছিলাম। অনেকের
সাথেই ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। যেকোন সমস্যাই, সমস্যা বলে মনে হয়নি। আমার ভেতরে
কিছু শিশুসুলভ আচরণ আছে, যার কারণে যেখানেই থাকিনা কেন কেউ একজন গার্জিয়ানে ভূমিকা
নিয়ে নেয়। ট্রেনিং-এও একজন ইন্ডিয়ান আপু ছিলেন! কিন্তু পরবর্তি পাঁচ দিন আমি নিজেই
সম্বল। মনে হতে লাগল আমি সকালে নিশ্চয়ই বাস মিস করব, হয়তো কিছু ভুলে ফেলে যাব,
ফ্রেঞ্চরা নাকি ডাচদের মতো বন্ধুসুলভ না, তারা ইংলিশ বলতে চায়না, কোন কিছু জানতে
চাইলে উত্তর দেয়না, ভাবতে ভাবতে মাথা হ্যাং হয়ে যাচ্ছিল। কি হবে আমার, আর প্যারিসের
পকেটমারদের এতো এতো সুনাম শুনেছি যে কিছু না হারিয়ে ঠিকঠাক মতো ফিরতে পারব তা
অসম্ভব মনে হচ্ছিল।
সকালবেলা ঠিকমতোই বাস কাউন্টারে এসে পৌছালাম। আমার দুইহাতে দুইটি
শপিংব্যাগ, যার একটি যে কোন মুহুর্তে ছিড়ে জিনিসপত্র সব ছড়িয়ে পড়তে পারে।
শপিংব্যাগের রহস্য হলো মূল লাগেজ অফিসে রেখে এসেছি, পরামর্শ ছিলো এতো বড় লাগেজ যেন
প্যারিসে না নিয়ে যাই, শুধু যা লাগবে সেটুকুই নেই। দেখা গেল শুধু স্যুটকেসটাই
অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি, জিনিসপত্র বেশিরভাগই বাইরে। যার ফলশ্রুতিতে দুই হাতে দুই
পলিথিনের ব্যাগ, যার একটা ছিড়ে যায় যায় অবস্থা! খুব স্বতস্ফূর্ত ভাবেই মাথায় চলে
এলো যে আমাকে দিয়ে কিছু হবেনা। কিন্তু সেই পরিস্থিতিও সামলে নিতে পেরেছিলাম।
রাতের ঘুম বাসে ঘুমালাম। পাশের সিট ছিল খালি তাই কোন কিছু নিয়ে ভাবতে হল
না। সাত ঘন্টা জার্নির পর প্যারিস গ্যালিনিতে এসে পৌছালাম। ভাবলাম এখান থেকেই
হোস্টেলে সরাসরি চলে যাওয়া যাবে। কিন্তু একজন দেখিয়ে দিলেন আমি যেখানে আছি তা
প্যারিসের শেষ প্রান্ত। শহরে যেতে আরো কিছু সময় লাগবে। মেট্রোতে দুইবার ট্রেন
চেঞ্জ আর আরো একবার বাস আর কি! এখন মেট্রোতে কোথা থেকে উঠব বুঝতে পারছিনা,
মানুষজনও নাই জানতে চাওয়ার মতো। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে
বললেন জানেন না। বেশী অবাক হইনি, ফ্রেঞ্চরা অমিশুক হয় সে বিষয়ে অনেকেই বলে
দিয়েছিল। পরে এক ইন্ডিয়ান ভদ্রলোক ট্রেনের টিকিট কেটে কোন ট্রেনে উঠবো দেখিয়ে
দিলেন। মেট্রোতে বসে যখন কানে বাংলা কথা ভেসে আসল ভাবলাম হ্যালুসিনেশন হচ্ছে কিনা!
ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখি একজন মোবাইলে বাংলায় কথা বলছে, বাংলাদেশী বাংলায়। দুই চারটা বাক্য
বিনিময়ের পরের স্টপেজেই তিনি নেমে গেলেন। আমিও নেমে যখন পরের ট্রেনে উঠে যার কাছে
জানতে চাইলাম ট্রেনটি মপারনেস যাচ্ছে কিনা, তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “আপা আপনি কি
বাংলাদেশী?”। ২০ বা ২২ বছরের একটি ছেলে। সে বলল “ আপা চিন্তা কইরেন না, আমিও
ওইখানেই নামমু”। তাকে জিজ্ঞেস করলাম কি করে, এখানে পড়াশুনা করে কিনা। সে বলল এখানে
চাচাদের কাছে আসছে, কিছু করেনা, খায়দায় আর ঘুরে। প্যারিসে কেউ খাচ্ছেদাচ্ছে আর
ঘুরছে জেনে ভালই লাগল। ট্রেন থেকে নেমে স্টেশন থেকে বের হওয়ার পথে ছেলেটি তার
চাচতো ভাইয়ের কাছে নিয়ে গেলো। বললো “ এই আপা বাংলাদেশ থেকে আসছে, ৯৫ নাম্বার বাসে
যাইবো। কোনখান থেকে উঠবো জানো?”। তার ভাই সেখানে ফুল বিক্রেতা। বাংলাদেশ থেকে
এসেছি শুনেই এগিয়ে এসে হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে নিলেন। আমিও বেশী বাঁধা দিলাম না কারণ
কাঁধ ব্যাথা করছিলো। বাংলাদেশ থেকে কবে এসেছি, কদিন থাকব, দুপুরে কিছু খেয়েছি
কিনা, কোথায় থাকব এরকম প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে এগিয়ে চললাম। আমি একা এসেছি শুনে
বললেন “কেমন হইল আপা, একা একা আসলেন, দুলাভাইরে নিয়া আসলে কত ভালো হইতো!” আমিও
পুরোপুরি একমত। দুলাভাইকে নিয়ে আসতে পারলে অবশ্যই অনেক ভালো হতো, কিন্তু শুধুমাত্র
প্যারিস ট্রিপের জন্য এতো শর্ট নোটিসে দুলাভাই জোগাড় করা যায়নি, কি আর করা! তারপর
উনি আমাকে বাস কাউন্টারে রেখে, কিছু না খাওয়াতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিদায়
নিলেন। কিছুক্ষণ পর বাস আসার পর আমি উঠে এই ঠিকানায় যাব বলতেই ড্রাইভার গম্ভীর
গলায় বললেন যে আমাকে রাস্তার ওপারের কাউন্টার থেকে উঠতে হবে। ফলে নেমে রাস্তা পার
হয়ে আবার দাঁড়ালাম। কিছুক্ষন আবার বাস আসল, আমি ড্রাইভারকে বললাম আমি এই ঠিকানায়
যাব, বাসটা সেখানেই যাবে কিনা। ড্রাইভার বলল “I don’t
speak English, I don’t speak English”. বলে বাস ছেড়ে দিল। সে
ইংলিশ বলেনা তা বুঝতে পারলেও বাসটা সেখানে যাবে কি যাবে না তা বুঝতে পারলাম না।
এদিকে আবার বাস চলতে শুরু করেছে। আশেপাশের মুখগুলি দেখে সাহস পেলাম না। কেউ ইংলিশে
কথা বলেনা। পরে আমার বয়সী একটি মেয়ে আমাকে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করল, অতিকষ্টে তার
ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংলিশ পুনরুদ্ধার করতে পারলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম আমি যে যাচ্ছি
আমার কি টিকেট লাগবেনা। পরে সে ড্রাইভারের সাথে কথা বলে টিকেট কেটে দিল। বাস
ড্রাইভারের আচরণে একটু আহত হয়েছিলাম। ফ্রেঞ্চরা যে rude
তা আবারো মনে পড়ল। তারপর নির্দিষ্ট স্টপেজে নেমে গেলাম। সাথে একজন বয়স্ক
মহিলাও নামলেন। ড্রাইভারকে মনে হলো তাকে কিছু বলে দিলেন। আমি হোস্টেলে ঠিকানাটা
দেখিয়ে কোথায় হতে পারে জানতে চাইলাম। ভদ্রমহিলা ইংলিশ বলেন না আর আমি একবর্ণও
ফ্রেঞ্চ বুঝিনা। সৌভাগ্যক্রমে বিল্ডিং-এর নাম্বারগুলো ইংরেজিতেই ছিল। তিনি আমাকে
দেখিয়ে দিতে লাগলেন। আমার সাথে সাথে এসে হোস্টেল পর্যন্ত খুঁজে বের দিলেন। উনাকে
জড়িয়ে ধরে বিদায় দিলাম, তিনিও কিছু বললেন, বুঝতে পারিনি, কিন্তু ভালো কিছু যে সে
বিষয়ে সন্দেহ নাই। ভালোবাসার প্রকাশ সার্বজনীন, ভাষার প্রতিবন্ধকতা খুব বেশী
প্রভাব ফেলতে পারেনা। তাই ফ্রেঞ্চরা যে অমিশুক হয় সেই ধারণাটা একটু পরিবর্তন করে
নিলাম, হয়তো অধিকাংশ ফ্রেঞ্চরাই অমিশুক হয়, কিন্তু সবাই নয়।
হোস্টেলের রিসিপশনে ফ্রেঞ্চ মুভি থেকে উঠে আসা নায়কের মতো রিসিপশনিস্ট
ছিলো। তার কাছ থেকে কার্ড ও অন্যান্য কিছু বুঝে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলাম। চার
বেডের ফিমেল ডর্ম। রুমে তখন আর কেউ ছিল না। ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে রেখে, বাথরুম থেকে
ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় আরাম করে বসার পর প্রথমবার মনে হলো, “My goodness!!! আমি এখন প্যারিসে,
সত্যি সত্যি!!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন