রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

কৌতুহল ও মাদক নির্ভরশীলতা

মানুষ মাত্রই কৌতুহলী। মানুষ মাত্রই নতুন কিছু জানতে চায়, বুঝতে চায়, পরীক্ষা করে দেখতে চায়। মানব সভ্যতা বিকাশে কৌতুহলের ভুমিকা অপরিসীম। কিন্তু এই কৌতুহলই আবার কখনো কখনো বিপদজনক হয়ে দাঁড়ায়। যখন তা মাদকের প্রতি দেখানো হয়। অধিকাংশ মাদক নির্ভরশীল ব্যাক্তি কৌতুহলী হয়েই এই পথে পা বাড়ান। উঠতি বয়সে সিগারেট দিয়ে শুরু করে তারপর কিছুদিন পরে গাঁজার প্রথম টান। বন্ধুদের কাছে শোনা গল্প বা খাওয়ার  পর কেমন লাগে তা জানার জন্যই কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে টান দেয়া হয়। অ্যামেরিকান একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় শতকরা ৫ থেকে ১৯ ভাগ অনুর্দ্ধ ১৯ বছরের কিশোরেরা গুরুতর মাদকাসক্তির সমস্যায় আক্রান্ত হয় যার প্রথাগত চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশও পরিস্থিতি আশংকাজনকভাবে অবনতি ঘটছে। স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালিত জরীপ অনুযায়ী সারাদেশে মাদকাসক্তের হার প্রায় ৪৬ লাখ, কোন কোন সূত্র অনুযায়ী তা ৭০ লাখের বেশী। এর মধ্যে ৯১ শতাংশই কিশোর ও যুবক। কিশোর বয়সে কৌতুহল থাকে বেশী এবং প্রলোভন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকে কম। ফলে বন্ধুদের দ্বারা বা বন্ধুদের কাছ থেকে শোনা তথ্য দ্বারা প্রভাবিত হয় সহজেই। অধিকাংশ মাদকসেবী বিষ্যটি যেভাবে উপস্থাপন করেন তা হলো "মনে হইলো একটু খেয়ে দেখি কেমন লাগে, অনেক তো শুনছি"। ১৭ বছর বয়সী একজন ক্লায়েন্ট বলেছিলেন " আমার জীবনের একটা ফান্ডা হইলো সবকিছু ট্রাই করমু, যতরকম নেশা আছে সব একবার খেয়ে দেখমু"। সবগুলো দেখতে হয়নি ইয়াবাতে এসেই জড়িয়ে পড়লেন এবং সেই সময় একটি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে ভর্তি ছিলেন। জীবন সম্পর্কে অতিরিক্ত অ্যাডভেঞ্চার ও কৌতুহলী মনোভাব তাকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখী দাঁড় করিয়েছিলো।  'ও' লেভেল পরীক্ষার্থী ছিলেন সে বছর মিস করলেন। প্রথমে কৌতুহল থেকে নেওয়া হয়েছে, তা থেকে উদ্ভূত সমস্যার ফলে পরে হতাশা থেকে নেওয়া হয়। এভাবে ব্যাক্তি মাদকের নির্ভরশীলতার জালে জড়িয়ে যায়। সুতরাং আমরা যেন আমাদের জন্য ক্ষতিকর এমন কৌতুহল থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারি এবং এ বিষয়ে বন্ধুদের মাঝে সচেতনতা তৈরী করতে পারি। মাদকগ্রহণ সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে বন্ধুদের চাপ যেন অগ্রাহ্য করতে পারি।

২টি মন্তব্য:

  1. এরকম সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় লেখা আরো পড়ার প্রত্যাশা করছি। ধন্যবাদ।
    - রেজা আজিজ

    উত্তরমুছুন