শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৩

প্যানিক ডিসঅর্ডারে করণীয়

প্যানিক ডিসঅর্ডার বিষয়টা কি তা আগের লেখাতেই আলোচনা করেছিলাম। এই রোগে প্যানিক অ্যাটাককেই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ভেবে অনেকে ভুল করেন। আজকে আমরা প্যানিক ডিসঅর্ডারে নিজেরা কোন কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে পারি তা জানব। তবে মজার কথা হচ্ছে এই সমস্যায় সবচেয়ে কঠিন দিকটি হলো ক্লায়েন্ট কে রোগটি যে মানসিক তা accept করতে সাহায্য করা। কারণ ব্যাক্তি অনেক সময় এতো তীব্রভাবে লক্ষণগুলো অনুভব করে যে তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয় লক্ষণগুলো শারীরিক নয় মানসিক কারণে সৃষ্ট। আপনার diagnosis যদি প্যানিক ডিসঅর্ডার হয় তাহলে এই সত্য আপনি যত দ্রুত স্বীকার করে নেবেন আপনার সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা ততখানি তাড়াতাড়ি হবে।

ভেবে দেখুন আপনার হার্টবিট যদি হঠাৎ করেই তীব্রভাবে বেড়ে যায়, আপনার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, শরীর কাঁপতে থাকে, মনে হয় এখুনি বুঝি মরে যাবো, তাহলে ভয় পাবেন কিনা? ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক। একবার এরকম হলে আবার হতে পারে সেই ভয়ও কিন্তু কাজ করে। এরকম ভয় থেকে অনেকে কিন্তু নিরাপত্তার জন্য কিছু আচরণ করে থাকেন। যেমনঃ বাড়ীর বাইরে যাওয়া কমিয়ে দেওয়া, একা একা না থাকা, সঙ্গে সবসময় কাউকে রাখা, লক্ষণগুলো শুরু হতে নিলেই কোন ওষুধ খেয়ে নেওয়া ইত্যাদি। যার ফলে ব্যাক্তি সেই দুষ্ট চক্রের ভিতরেই থাকে, সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনা। এখন আপনি ঠিক করুন, আপনি এই নিরাপদ আচরণগুলো যা আপনার সমস্যাকে জিইয়ে রাখে সেগুলো আপনি করবেন কিনা? আমি জানি এই পদক্ষেপটা নেয়া আপনার জন্য অনেক কঠিন। চেষ্টা করুন, যদি একান্তই অসম্ভব মনে হয় প্রফেশনাল কারো হেল্প নিন।

এছাড়াও এই সমস্যার কারণে যেসব পরিস্থিতিগুলো আগে এড়িয়ে যেতেন এখন থেকে সেসব পরিস্থিতির মুখোমুখি বেশী বেশী করে হোন। যখন লক্ষণগুলো শুরু হতে নিবে তখন শিথিলায়ন (relaxation) করার চেষ্টা করুন, নিঃশ্বাস ধীরে ধীরে নিন কিছুক্ষণ ধরে রেখে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। নিজেকে বলুন এই লক্ষণগুলো খুব বেশী সময় ধরে তীব্রভাবে থাকবে না, ধীরে ধীরে কমে যাবে, আমি এই কঠিন সময়টাও পার করতে পারবো। গান শুনুন, যা ভালো লাগে সেই কাজে মনোনিবেশ করুন বা যা করছিলেন তাই চালিয়ে যান, দেখবেন ধীরে ধীরে লক্ষণগুলো এমনিতেই কমে আসবে। এভাবে প্যানিক অ্যাটাকের ঘটনাও কমে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন